নোটবন্দির পর বেআইনি লেনদেনে ভয় পাচ্ছেন, কেন্দ্রের পাশে নীতির ভাইস চেয়ারম্যান
মোদী সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে নোটবন্দির সুফল ব্যাখ্যা নীতি আয়োগের চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: নোট বাতিল নিয়ে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে চলছে টানাপোড়েন। দাবি-পাল্টা দাবি ঘিরেই উত্তপ্ত রাজনীতির পরিসর। এসবের মধ্যেই বিমুদ্রাকরণের পক্ষে দাঁড়ালেন নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার। তাঁর কথায়, ''কালো টাকা নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা নিয়েছে নোটবন্দি''।
নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যানের কথায়, ''কে বলছে, নোটবন্দি উদ্দেশ্য পূরণ করেনি? প্রায় ৩-৪ লক্ষ কোটি টাকা পুনরায় অর্থ ব্যবস্থায় ফিরে এসেছে। এর ফলে পুরো অর্থ ব্যবস্থাই এখন করের আওতায় চলে এসেছে। ১৮ লক্ষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মালিককে নোটিস পাঠানো হয়েছে। আরও কয়েক লক্ষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে''।
নোটবন্দির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রাহুল গান্ধী। তার প্রেক্ষিতে রাজীব কুমার বলেন, ''কালো টাকা সাদা হয়নি, তবে ধূসর নিশ্চিতভাবে হয়েছে। নগদ লেনদেন অনেকটাই কমে গিয়েছে''। রাজীব কুমার আরও বলেন, নোটবন্দির কারণে বেআইনিভাবে নগদ লেনদেন করতে গিয়ে ভয় পাচ্ছেন মানুষ।
বলে রাখি, নোট বাতিল নিয়ে আরবিআইয়ের পরিসংখ্যান প্রকাশের পর এদিনই মোদীকে নিশানা করেছেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস সভাপতির কথায়,''নোটবন্দি একটা বড় দুর্নীতি ছাড়া কিছুই নয়। আস্তে আস্তে প্রমাণ প্রকাশ্যে আসছে। ২৫-২০জন শিল্পপতি বন্ধুদের জন্য নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নোট বাতিলের সুযোগে কালো টাকা বদল করে নিয়েছেন ওনার বন্ধুরা''। প্রধানমন্ত্রীকে জবাবদিহিও চেয়েছেন রাহুল গান্ধী।
ফেসবুক পোস্টে রাহুলের সমালোচনা করে জেটলি দাবি করেন, ''টাকা ফেরত না আসাই কি নোটবন্দির একমাত্র লক্ষ্য ছিল? একেবারেই নয়। কর ফাঁকির ব্যবস্থা থেকে করযুক্ত সমাজ তৈরিই ছিল নোট বাতিলের বৃহত্তর লক্ষ্য''।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখন আর্থিক ব্যবস্থায় ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট মিলিয়ে অর্থমূল্য ছিল ১৫.৪১ লক্ষ কোটি। রবিআইয়ের পরিসংখ্যান বলছে, তার মধ্যে ১৫.৩১ লক্ষ কোটি অর্থমূল্যের নোটই ফেরত এসেছে। অর্থাত্ ১০,৭২০ কোটি অর্থমূল্যের নোট ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার বাইরে চলে গিয়েছে।
নোট বাতিলের পর নতুন নোট ছাপাতে বিশাল টাকা খরচ হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। পুরনো নোটের জায়গায় নতুন ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোট চালু করা হয়। বিমুদ্রাকরণের পর ২০১৬-১৭ সালে নতুন ৫০০, ২০০০ টাকা ও অন্যান্য অঙ্কের নোট ছাপাতে ৭,৯৬৫ কোটি টাকা খরচ করেছে আরবিআই। তার আগের অর্থবর্ষে খরচ হয়েছিল ৩,৪২১ কোটি টাকা। অর্থাত্ নোট বাতিলের পর দ্বিগুণ খরচ করেছে আরবিআই। ২০১৭-১৮ (জুলাই,২০১৭-জুন,২০১৮) নোট ছাপাতে খরচ পড়েছে ৪,৯১২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন- ক্ষমতায় ফিরতে এই ২০৮টি আসনে নজর মোদীর, জেনে নিন কী সমীকরণ?