রাজস্থানের শিক্ষায় সরাসরি আরএসএস-এর থাবা, ইতিহাসের সিলেবাস থেকে বাদ নিউটন, আকবর, পিথাগোরাস
এবার স্কুলের পাঠ্য বইতেও 'গেরুয়া বাহিনী'র সরাসরি প্রভাব বিস্তার শুরু হল। ভারতীয় শিক্ষাকে 'বিদেশি' প্রভাব মুক্ত করার আরএসএস-এর দাবি মেনে এবারে রাজস্থানের ইতিহাসের ৬ কোটি ৫০ লক্ষ পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়লেন নিউটন, পিথাগোরাস, আকবর।
ওয়েব ডেস্ক: এবার স্কুলের পাঠ্য বইতেও 'গেরুয়া বাহিনী'র সরাসরি প্রভাব বিস্তার শুরু হল। ভারতীয় শিক্ষাকে 'বিদেশি' প্রভাব মুক্ত করার আরএসএস-এর দাবি মেনে এবারে রাজস্থানের ইতিহাসের ৬ কোটি ৫০ লক্ষ পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়লেন নিউটন, পিথাগোরাস, আকবর।
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থাই বদলে ফেলার দাবি জোরদার করেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ। এই নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে বিজেপি সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষায় গৈরিকিকরণের পথে হাঁটছে, এই অভিযোগও আনে বিরোধীরা।
তবে রাজস্থানের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের 'ইতিহাস পরিবর্তনের' সিদ্ধান্ত বুঝিয়ে দিল, বিরোধীরা যতই আপত্তি করুক না কেন, আরএসএস-এর ঠিক করে দেওয়া পথেই হাঁটবে তারা।
রাজস্থানের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষামন্ত্রী, আরএসএস-এর সক্রিয় সদস্য বাসুদেব দেবনানি সাফ জানিয়েছেন, আকবর, আইজ্যাক নিউটন, পিথাগোরাসদের মত বিদেশিদের নাম ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। বদলে দেশীয় নায়কদের, যেমন বীর সাভারকর, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, ভগৎ সিং, মহারাজা সুরজ মল ও মহারাণা প্রতাপের কথা আরও বেশি বেশি করে থাকবে ইতিহাস বইতে।
বেশ গর্বের সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন ''কেন আমাদের ছেলেমেয়েরা শুধু আকবরের কথা জানবে? কেন মহারাণা প্রতাপের কথা জানবে না? আমাদের ছেলে মেয়েরা লাগাতার বিদেশী শাসক, বিজ্ঞানী, অঙ্কবিদদের কথা পড়ে আসছে। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে পাঠ্যসূচি বদলাবার চেষ্টা করছিলাম। প্রথম বছর আমাকে বলা হয়েছিল মাঝপথে পরিবর্তন করতে গেলে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হবে। এই বছর প্রথম থেকেই তাই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।''
এর আগে সরকারি স্কুলগুলিতে সূর্য নমস্কার বাধ্যতামূলক করে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন দেবনানি। পরে অবশ্য মধ্যপ্রদেশ সরকারও সব সমালোচনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সে রাজ্যেও একই প্রথা চালু করে।
তবে শুধু রাজস্থান আর মধ্যপ্রদেশ নয়, ২০১৪ সালে গুজরাত সরকারও শিক্ষায় সরাসরি গৈরিকিকরণের পথে হাঁটে। আরএসএস-এর এডুকেশন উইং-এর সক্রিয় সদস্য দীনানাথ বাত্রার সাতটি বই প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারির পড়ুয়াদের জন্য চালু করা হয়। সেই বইয়ের বিষয়সূচি নিয়েও সারা দেশে কম হইচই হয়নি।