ক্ষমা চেয়ে শহিদ হেমন্তকে নিয়ে নিজের মন্তব্য ফেরালেন সাধ্বী প্রজ্ঞা
তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এই মন্তব্যের জেরে শত্রুদেশের সুবিধা হবে। তাই তিনি তাঁর মন্তব্য ফিরিয়ে নিচ্ছেন। আর ক্ষমা চাইছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ক্ষমা চাইলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। মুম্বই হামলায় জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ হেমন্ত কারকারেকে নিয়ে তাঁর মন্তব্য ফিরিয়ে নিলেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি প্রার্থী। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এই মন্তব্যের জেরে শত্রুদেশের সুবিধা হবে। তাই তিনি তাঁর মন্তব্য ফিরিয়ে নিচ্ছেন। আর ক্ষমা চাইছেন।
তবে জেলে থাকাকালীন তাঁর উপর পুলিসি অত্যাচারের অভিযোগ থেকে তিনি যে সরছেন, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। তিনি জানিয়েছেন, ওই ঘটনা তাঁর ব্যক্তিগত যন্ত্রণার বিষয়।
আরও পড়ুন: শহিদ হেমন্তকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, সাধ্বী প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ
প্রার্থী হওয়ার পর কর্মীদের সামনে পুলিসি অত্যাচারের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন বিজেপির প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। তার ২৪ ঘণ্টার একই ইস্যু নিয়ে সরব হতে গিয়ে বিতর্ক বাঁধিয়ে বসেন ভোপাল লোকসভা আসনে কংগ্রেসের দ্বিগ্বিজয় সিংয়ের এই প্রতিপক্ষ।
মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার শহিদ মহারাষ্ট্রের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াডের প্রধান হেমন্ত কারকারে সম্বন্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। তাঁর অভিযোগ, তাঁর উপর পুলিসি অত্যাচারের নেতৃত্বে ছিলেন হেমন্ত। তাঁকে দিয়ে জোর করে মালেগাঁও বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত করতে চেয়েছিলেন।
Pragya Singh Thakur, BJP LS candidate from Bhopal, on her statement on Mumbai ATS Chief late Hemant Karkare: I felt that the enemies of the country were being benefited from it, therefore I take back my statement and apologize for it, it was my personal pain. pic.twitter.com/j7pzrKf6G5
— ANI (@ANI) April 19, 2019
প্রজ্ঞার দাবি, তিনি তখনই হেমন্তকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। সেই কারণেই মুম্বই হামলার সময় হেমন্ত নিহত হয় বলে দাবি করেছেন বিজেপির প্রার্থী।
এর পরই বিতর্ক তৈরি হয়। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের হয়। কমিশন জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রতিবাদ জানায় আইপিএস অ্যাসোসিয়েশনও। এই পরিস্থিতিতে বিবৃতি দেয় বিজেপি। এই ঘটনাকে সাধ্বীর ব্যক্তিগত মন্তব্য বলে দায় এড়ানো হয় বিজেপির তরফে। তারই কয়েকঘণ্টা পরই বয়ান বদল করেন সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। ক্ষমা চেয়ে নেন।
Pragya Singh Thakur, BJP LS candidate from Bhopal, on her statement on Mumbai ATS Chief late Hemant Karkare: He (Hemant Karkare) died from the bullets of terrorists from the enemy country, he is certainly a martyr. https://t.co/q3wz0t2FWK
— ANI (@ANI) April 19, 2019
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে মালেগাঁও বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণেই অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা। তিনি এখন জামিনে মুক্ত। তবে তাঁর বিরুদ্ধে মকোকা আইন প্রত্যাহার করে নিয়েছে এনআইএ। সপ্তাহখানেক আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। তার পরই ভোপাল থেকে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়।
তাঁর নাম ঘোষণার পর থেকেই বিতর্ক ছড়িয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত একজনকে বিজেপি কীভাবে প্রার্থী করে? যদিও সন্ত্রাসের অভিযোগ মানতে নারাজ প্রজ্ঞা। তাঁকে জোর করে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
আরও পড়ুন: আমার অভিশাপেই জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন হেমন্ত কারকারে : সাধ্বী প্রজ্ঞা
তাই গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিসি অত্যাচারের অভিযোগ তুলে সরব হন তিনি। বৃহস্পতিবার দাবি করেছিলেন, জেলে তাঁকে টানা ২৪ দিন মারধর করা হয়। তাঁকে জল ছাড়া আর কিছুই খেতে দেওয়া হয়নি। মারধরের সময় গালিগালাজ করা হত। বেল্ট দিয়ে মারা হত। উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হত। পোশাক খুলে নিয়ে হুমকি দেওয়া হত।
আরও পড়ুন: হিন্দুত্বকে টার্গেট করতেই আমার উপর অত্যাচার চালানো হয়, দাবি সাধ্বী প্রজ্ঞার
তাঁর দাবি, শুধু মারধর করে ছেড়ে দেওয়া হত না। মারের জেরে তাঁর সারা শরীরে দাগ হয়ে যেত রক্ত বেরোত। তখন নুন জল গরম করে এনে তাতে হাত ডুবিয়ে দেওয়া হত। কিছুক্ষণ পর ফের মারধর করা হত।
এভাবে মারধরের জেরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন। এমন অবস্থা হয়েছিল যে তিনি হাসপাতালের বেডে এপাশ-ওপাশও করতে পারতেন না বলে দাবি করেছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা।
আরও পড়ুন: আমি হিন্দু, আমার ধর্মকর্মের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না : যোগী আদিত্যনাথ
বৃহস্পতিবারের বিবৃতির পর কোনও বিতর্ক হয়নি। তবে শুক্রবার সাধ্বীর মন্তব্যের পর বিতর্ক চরমে উঠেছে। ক্ষমা চেয়ে আপাতত ওই বিতর্কে জল ঢেলেছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা।