ওয়েব ডেস্ক : পুরনো ৫০০, ১০০০-এর নোট সব বাতিল। এদিকে, তাঁর কাছে জমানো ২৩,০০০ টাকার পুরোটাই ছিল পুরনো নোটে। জমানো সেইসব নোটই পুড়িয়ে ফেললেন কেরলের এক ব্যবসায়ী। সেইসঙ্গে নোট বাতিলের প্রতিবাদ জানাতে অর্ধেক মাথার চুলও কেটে ফেলেন তিনি। 'হুমকি' দিলেন, যতদিন না মোদী প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরছেন, ততদিন তিনি এরকমই মাথায় 'টাক' নিয়ে ঘুরবেন।
Add Zee News as a Preferred Source
কেরালার কোল্লাম জেলার কাডাক্কাল মুক্কুন্নামের বাসিন্দা ইয়াহিয়া। ৭০ বছর বয়স্ক ইয়াহিয়ার একটি ফাস্টফুডের দোকান রয়েছে। তাঁর এই অভিনব প্রতিবাদ এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় হটকেক। তবে ইয়াহিয়ার চমক এখানেই শেষ নয়। দোকানে কাজ করার সময় তাঁর পোশাকটিও বেশ মজাদার। ম্যাক্সি বা নাইটি পরে দোকানে কাজ করেন ইয়াহিয়া। কারণ তাঁর যুক্তি, এতে তাঁর কাজ করতে বেশ সুবিধা হয়। কারণ তাঁকে তো একা হাতেই রান্না, পরিবেশন, বাসন ধোওয়া সব করতে হয়।
আগে ইয়াহিয়া ঘুরে ঘুরে নারকেল পাড়ার কাজ করতেন। মাঝেমধ্যে খামারেও কাজ করতেন। কিন্তু তাতে মেয়ের বিয়ের টাকা রোজগার করা সম্ভব নয় ভেবে, সবকিছু বিক্রিবাটা করে দিয়ে মধ্য প্রাচ্যে যান ইয়াহিয়া। কিন্তু তাতেও বিশেষ কিছু সুবিধা আদায় করতে না পেরে, সামান্য কিছু টাকা জমিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন। তারপর ওই যত্-কিঞ্চিত জমানো টাকা আর ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে মেরে বিয়ে দেন। শুরু করেন নতুন ফাস্টফুডের দোকান। বেশ ভালোই চলছিল সেই দোকান। হাজার তেইশ টাকা জমিয়েওছিলেন। কিন্তু, মোদী নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করতেই, তাঁর কথায় সব পরিশ্রম 'জলে চলে গেল'।
ইয়াহিয়া জানালেন, জমানো ২৩০০০ টাকার পুরোটাই ছিল বাতিল ও পুরনো ৫০০, ১০০০-এর নোটে। বাতিল নোট বদলের জন্য তিনি দুদিন কাছের ব্যাঙ্কে গিয়ে লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু পরপর দুদিনই তাঁকে নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়। এমনকী দ্বিতীয়দিন লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি ভীষণরকম অসুস্থও হয়ে পড়েন। অথচ পুরনো নোটের কোনও 'গতি' হয় না। সামান্য দোকানদার ইয়াহিয়ার সমবায় ব্যাঙ্কে একটি লোন অ্যাকাউন্ট ছাড়া আর কোনও অ্যাকাউন্টও ছিল না। এদিকে, সমবায় ব্যাঙ্কে সবরকম লেনদেন বন্ধ। ফলে পুরনো নোট কোথাও জমা দেওয়া সম্ভব নয় বুঝে, শেশমেষ ইয়াহিয়া পুড়িয়ে ফেলেন তাঁর এতদিনের কষ্টের সঞ্চয়। আর তারপরই নাপিতে কাছে অর্ধেক মাথা মুড়িয়ে আসেন তিনি।
অবশ্যই পড়ুন, নোট বাতিলের জের, ফিরে এল 'দেনাপাওনা'র নিরুপমার স্মৃতি