'খুন যেন আত্মহত্যা না হয়ে যায়', সন্দেশখালির ঘটনায় মন্তব্য রাজ্যপালের, গাফিলতির অভিযোগ পরিবারের
সন্দেশখালিতে ভিলেজ পুলিসের মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন মৃতের বাবা। ছুটি হয়ে যাওয়ার পরেও বাড়ি থেকে ডেকে কেন অভিযানে নিয়ে যাওয়া হয় বিশ্বজিতকে?
অর্ণবাংশু নিয়োগী : "নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। যাতে খুন কোনওভাবে আত্মহত্যা না হয়ে যায়। সত্য সামনে আসুক।" এদিন একবালপুরে মাড়োয়ারি মহিলা সমিতির অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজ্যপাল। সেখানেই সন্দেশখালিতে ভিলেজ পুলিসের মৃত্যুর ঘটনায় এই মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল।
অন্যদিকে, সন্দেশখালিতে ভিলেজ পুলিসের মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন মৃতের বাবা। ছুটি হয়ে যাওয়ার পরেও বাড়ি থেকে ডেকে কেন অভিযানে নিয়ে যাওয়া হয় বিশ্বজিতকে? অস্ত্রশস্ত্র ছাড়াই কেন অভিযানে যাওয়া হল? দুষ্কৃতীদের ধরতে কেন খালি হাতে অভিযানে পাঠানো হল ছেলেকে? কেন বিশ্বজিতকে রক্তাক্ত অবস্থায় তিন ঘণ্টায় ফেলে রাখা হল? প্রশ্ন তুলছেন বিশ্বজিতের বাবা।
এদিন ময়নাতদন্তের পর বিশ্বজিতের দেহ নিয়ে গ্রামে রওনা দেন বাবা। যদিও জামা তখনও ছেলের রক্তে ভিজে রয়েছে। পুলিসের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। চার বছর হল পুলিসের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। দিন আনি দিন খাওয়া পরিবারটা একটু সুখের মুখ দেখছিল। কিন্তু দুষ্কৃতীদের গুলিতে সব ছারখার হয়ে গিয়েছে। ছেলের শোকে ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন বিশ্বজিতের মা। স্তব্ধ গোটা গ্রামও।
সন্দেশখালির খুনলা এলাকার পোলপাড়া সিথিলিয়া গ্রামে শুক্রবার রাতে ওই এলাকার একটি পুজোর অনুষ্ঠান ঘিরে দুই দুষ্কৃতীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিস। এরপর পুলিসের ওপরেই উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। পুলিসকে লক্ষ্য করে গুলি-বোমা ছুড়তে থাকে তারা। পুলিসের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। জানা গিয়েছে, পুজোর অনুষ্ঠান ঘিরে দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতী কেদার সর্দার ও বিধান সর্দারের মধ্যে গোলমাল বাধে। তাদের রুখতেই অভিযান চালান ওই পুলিসকর্মীরা।
আরও পড়ুন, 'এরাজ্যেও অনেকের গোপনীয়তা খর্ব হয়েছে', ফোন ট্যাপিং নিয়ে বিস্ফোরক রাজ্যপাল
সংঘর্ষের ঘটনায় আপাতত দুজন, লাল্টু সর্দার ও কেদার সর্দার ধরা পড়েছে। গ্রামবাসীরা বলছেন, নাটের গুরু কেদারই। স্ত্রী স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। আর তাঁকে ঢাল করেই এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায় কেদারের সাঙ্গপাঙ্গরা। তোলাবাজি, ডাকাতি, পাচার সবই প্রকাশ্যে চলে। কেদার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামের মহিলারাও। যদিও তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান বলছেন পুরোটাই বিজেপির ষড়যন্ত্র। বিজেপি নেতাদের প্ররোচনাতেই দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালিয়েছে বলে দাবি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। তাঁর কথায়, ''দিলীপবাবুরা প্ররোচনা দিচ্ছেন। উত্সাহিত হয়ে পড়ছে দুষ্কৃতীরা।''