Kankaleshwari Kali Temple: দেবী এখানে কঙ্কালসার! ধোপাদের কাপড় কাচার পাথরে আঁকা ছিল তাঁর অবয়ব...
Kankaleshwari Kali Temple: স্বপ্নাদেশ পেয়ে রাজা দামোদরের তীরে ধোপাদের কাপড় কাচার কাজে ব্যবহৃত পাথরটি উদ্ধার করেন। সেই পাথরেই খোদাই করা ছিল দেবীমূর্তি। এই পাথরের দেবীমূর্তি পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠিত হয় মন্দিরে। এই মন্দির দু'হাজার বছরেরও বেশি পুরনো!
অরূপ লাহা: দক্ষিণবঙ্গের প্রাচীন কালী মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম বর্ধমানের কাঞ্চন নগরের কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির। কঙ্কালেশ্বরী কালীমন্দির পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান শহরের নিকটস্থ কাঞ্চননগর নামক স্থানে অবস্থিত এক বিখ্যাত নবরত্ন কালী মন্দির। এই মন্দির দু'হাজার বছরেরও বেশি পুরনো! বর্ধমানের মহারাজ বিজয়চাঁদ মহাতাবের উদ্যোগে এই মূর্তি কাঞ্চন নগরের মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সে সময় এই নবরত্ন মন্দিরে কোনও বিগ্রহ ছিল না। পাথরের কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠার দিন থেকে এখানে নিত্য পুজো শুরু হয়। কথিত, এক ধার্মিক পরিব্রাজক কমলানন্দ মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি দামোদরের তীরে ধোপাদের কাপড় কাচার কাজে ব্যবহৃত পাথরটি উদ্ধার করেন। সেই পাথরেই খোদাই করা ছিল এই দেবী মূর্তি। এই পাথরের দেবী মূর্তি পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠিত হয় মন্দিরে।
আরও পড়ুন: Diwali 2022: পা বাড়ালেই প্রদীপগ্রাম! ঘুরে আসুন লক্ষ প্রদীপময় আশ্চর্য এই গ্রাম থেকে...
কিন্তু পরে এখানে মূর্তি আসে। ১৩২০ বঙ্গাব্দে বা ১৯১৩ সালে বর্ধমানের কাঞ্চননগর এলাকা ভেসে যায় দামোদরের বন্যায়। বন্যার জল নামতে দামোদরের গর্ভ থেকে উদ্ধার হয় কষ্টিপাথরের দেবীমূর্তি। তারপর তা প্রতিষ্ঠা করা হয় কাঞ্চননগরের পঞ্চরত্ন বিষ্ণুমন্দিরে। সেই থেকে এখানে কঙ্কালেশ্বরী কালীর আরাধনা হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: Goddess Kali: করালবদনী এই কালীর উৎপত্তি কী ভাবে হল, জানেন?
এখানে কালী যেন একেবারে কঙ্কালসার! পাথরে খোদিত এবং মানবকঙ্কালের মতো দেখতে। শরীরের শিরা ধমনী অস্থি সব স্পষ্ট ! বিগ্রহটি অষ্টভুজা, গলায় নরমুণ্ডমালা, পদতলে শিব। দেবীর দু'পাশে দু'জন সহচরীর মূর্তি। আটটি হাতে নরমুণ্ড, শঙ্খ, চক্র, ধনু, খড়্গ, পাশ ইত্যাদি। প্রতিমার দেহের শিরা উপশিরার নিখুঁত ভাস্কর্য। কষ্টিপাথরে খোদিত কালীমূর্তির এই রূপের জন্যই এর নাম 'কঙ্কালেশ্বরী কালী'। শায়িত শিবের নাভি থেকে উৎপন্ন হয়েছে পদ্ম। সেই পদ্মের উপর দেবী বিরাজমান। তাঁর চালচিত্রে অঙ্কিত রয়েছে হাতি। প্রতিটি বিশেষ তিথিতে নিষ্ঠা-সহ দেবীর পুজো হয়। এখানে বলি হয় না।
শ্রীচৈতন্যের দাক্ষিণাত্য ভ্রমণের সঙ্গী ছিলেন কবি গোবিন্দ দাস। তাঁর জন্মভিটে রয়েছে এই কাঞ্চননগরেই। সেই জন্মভিটের কাছেই এই পঞ্চরত্ন বিষ্ণুমন্দির। আর সেখানেই অধিষ্ঠিত এই কঙ্কালেশ্বরী কালী।
প্রতিবছর কালীপুজোর দিন এই মন্দিরে বহু ভক্তের সমাগম হয়। রাতে ভক্তদের ভোগ খাওয়ানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মহাদেব রায় বলেন, বর্তমানে ট্রাস্টি বোর্ড পুজো ও মন্দিরের দেখভাল করে। পুজোর দিন সন্ধ্যায় পুজো শুরু হয়। সকালে মায়ের চিঁড়ে ভোগ, রাতে খিচুড়ি ভোগ। এখানে মায়ের বিশেষ ভোগও হয়।