শিক্ষাই মুক্তির একমাত্র পথ: মালালা
তালিবানি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলেন ১৫ বছরের মেয়েটি। ফল স্বরূপ গুলিবিদ্ধ হতে হয় তাঁকে। আজ ৯ মাস পর তাঁর ষোলে বছরের জন্মদিনেও মালালা ইউসুফ জাইয়ের গলায় শোনা গেল সেই একই বার্তা। জন্মদিনে রাষ্ট্রসঙ্ঘে বক্তৃতা দিলেন মালালা। জানালেন, শিক্ষাই মুক্তির একমাত্র পথ।
তালিবানি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলেন ১৫ বছরের মেয়েটি। ফল স্বরূপ গুলিবিদ্ধ হতে হয় তাঁকে। আজ ৯ মাস পর তাঁর ষোলো বছরের জন্মদিনেও মালালা ইউসুফ জাইয়ের গলায় শোনা গেল সেই একই বার্তা। জন্মদিনে রাষ্ট্রসঙ্ঘে বক্তৃতা দিলেন মালালা। জানালেন, "শিক্ষাই মুক্তির একমাত্র পথ।"
এ দিন পাকিস্তান ও ব্রিটেনের হাসপাতালের সকল ডাক্তার, নার্স ও অগণিত শুভাকাঙ্খীকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিজের বক্তব্য শুরু করেন মালালা। রাষ্ট্রসঙ্ঘে জরো হওয়া সারা পৃথিবীর মানুষের উদ্দেশে মালালা বলেন, "আজ শুধু মালালা ডে নয়। যেইসব ছেলেমেয়েরা নিজেদের অধিকারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন তাদের সকলের দিন আজ।" নিজেকে তালিবানদের হাতে আক্রান্ত হওয়া লক্ষ মানুষদের মধ্যে একজন মনে করেন মালালা। তিনি বলেন, সেইসব মানুষদের জন্য তিনি সোচ্চার হয়েছিলেন যাদের আওয়াজ পৃথিবীর কানে পৌঁছয় না। তাদেরকে শিক্ষার অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছিলেন তিনি।
তালিবানদের উদ্দেশে মালালা এ দিন বলেন, "৯ অক্টোবর, ২০১২, এই দিন তালিবানরা আমার ওপর গুলি চালায়। ওরা ভেবেছিল গুলি আমাকে চুপ করিয়ে দেবে। কিন্তু ওরা ব্যর্থ হয়েছে। সেই নৈশ্যব্দ থেকেই জন্ম নিয়েছে প্রতিবাদের ভাষা। সেই আক্রমণে যা শেষ হয়ে গেছে তা হল দুর্বলতা, ব্যর্থতা ও হতাশা। জন্ম নিয়েছে শক্তি ও অনুপ্রেরণা। আজ আমি এখানে এসেছি বিশ্বের সব শিশুর শিক্ষার অধিকার নিয়ে কথা বলতে। আমি চাই তালিবানি শিশুরা, সন্ত্রাসবাদীদের সন্তানেরাও শিক্ষিত হোক।"
মার্টিন লুথার কিং, নেলসন ম্যান্ডেলা ও মহম্মদ আলি জিন্নাহর মত নেতাদের দেখে লড়াই করার শক্তি পেয়েছেন। মহাত্মা গান্ধী, মাদার টেরেসার থেকে অহিংসতার দর্শন শিখেছেন বলে এ দিন জানান মালালা। "তালিবানিরা শিক্ষার শক্তি, নারীশক্তিকে ভয় পায়। তাই ওরা মহিলাদের ওপর আক্রমণ চালায়। স্কুলে বিস্ফোরণ ঘটায়," জন্মদিনে অকপট মালালা। পাকিস্তানকে শান্তিপ্রিয় দেশ বলে অভিহিত করেন মালালা। ইসলাম তাঁর কাছে শান্তি, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ধর্ম।
মালালা ডে-তে নারী স্বাধীনতা নিয়েও সোচ্চার হয়েছেন মালালা। বলেন, "আমি বিশ্বের সব নেতাদের কাছে শান্তি ও সাম্যের ওপর জোর দিতে অনুরোধ জানাচ্ছি। মহিলাদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে এরকম যে কোনও কৌশল অসমর্থন যোগ্য। পৃথিবীর সব শিশুদের জন্য শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা হোক। যদি আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে চাই তাহলে সবার আগে শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের জাগিয়ে তুলতে হবে। চলুন, আমরা সবাই দারিদ্র ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বিশ্বায়ন গড়ে তুলি।"