ডেঙ্গি সঙ্কটে রাজ্য, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গি। রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দু`হাজার ছুঁইছুঁই। নতুন করে ছ`জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এনিয়ে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাড়ল ২৪। যার মধ্যে কলকাতাতেই মারা গিয়েছেন ১৯ জন। যদিও সরকারি হিসেবে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৭।

Updated By: Sep 3, 2012, 10:56 PM IST

ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গি। রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দু`হাজার ছুঁইছুঁই। নতুন করে ছ`জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এনিয়ে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাড়ল ২৪। যার মধ্যে কলকাতাতেই মারা গিয়েছেন ১৯ জন। যদিও সরকারি হিসেবে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৭।
ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। রোগীর ভিড়ে উপচে পড়ছে চিকিত্সা কেন্দ্রগুলি। শয্যার অভাবে বহু বেসরকারি হাসপাতালই বাধ্য হচ্ছে রোগী ফিরিয়ে দিতে। সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও একইরকম পরিস্থিতি। যদিও, সরকারি হাসপাতালে শয্যার আকালের কথা স্বীকার করতে রাজি নয় সরকার। ডেঙ্গি মোকাবিলায় কলকাতা পুরসভার ভূমিকা নিয়ে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। অধিকাংশ চিকিত্সা প্রতিষ্ঠানই উপচে পড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের ভিড়ে। শয্যার অভাবে নো ভ্যাকেনসি বোর্ড টাঙাতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। শয্যা না থাকায় বাধ্য হয়েই অনেক রোগী ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলি। স্বাভাবিকভাবেই সরকারি হাসপাতালগুলিতেও রোগীর চাপ অনেক বেশি। যদিও সে কথা মানছেন না সরকার ও পুরসভা। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছে যে ডেঙ্গি নিয়ে অযথা কুৎসা রটানো উচিত না। রোগের ব্যাপ্তি থেকে শুরু করে চিকিত্সা পরিকাঠামোয় খামতি। ডেঙ্গি ঘিরে অব্যবস্থার কোনও তথ্যই এখনও পর্যন্ত স্বীকার করেনি রাজ্য। যদিও ক্রমশ ভয়াবহ হতে থাকা পরিস্থিতি আঙুল তুলছে চিকিত্সা পরিকাঠামোয় খামতির দিকেই।
রবিবার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষের পর সোমবার পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ডেঙ্গি নিয়ে করা মন্ত্যবের জেরে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের প্রথমসারির এই নেতা। তিনি বলেন, ``ডেঙ্গির প্রকোপের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রাকৃতিকভাবেই দু-এক বছর পর পর ডেঙ্গির ছড়ায়।`` প্রতিদিন রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামগ্রিক ভাবেই ডেঙ্গি পরস্থিতি অতন্ত্য উদ্বেগজনক। কলকাতা আর সল্টলেকের অবস্থা সবথেকে খারাপ। ফলস্বরূপ কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে রাজ্য সরকার এবং পুরসভাকে। বিভিন্ন স্তর থেকে উঠে আসা সমলোচনায় বিদ্ধ হচ্ছে `পরিবর্তনের`সরকার। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের নেতারা সেই সব সমালোচনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।
রবিবার, সরকার কেন, সেনাবাহিনী চাইলেও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, বলে মন্তব্য করেছিলেন অতীন ঘোষ। তারপর সোমবার ডেঙ্গি নিয়ে ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। রবিবার কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক প্রদীপ ঘোষ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ডেঙ্গি নিয়ে তথ্য চেপে যাওয়ার অভিযোগ আনেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে তার জবাব দিতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যটি করে বসেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী। এর সঙ্গে অবশ্য কংগ্রেসকে আবারও সিপিআইএম-এর `বি-টিম` বলেন ফিরহাদ।
রাজ্যে ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নিলেও তা মোকাবিলায় এখনও প্রায় নির্বিকার পুরসভা ও সরকার। শুধু নির্বিকার থাকাই নয় ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা নিয়ে রীতিমতো কাজিয়া শুরু হয়েছ পুরসভা আর সরকারের মধ্যে। আর এই ইস্যুতেই সরকারকে এক হাত নিয়েছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র।
প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যে যায়গায় পৌছেছে তা মহামারীর শামিল। ডেঙ্গিতে মৃত্যু নিয়ে পুরসভার শ্বেতপত্র প্রকাশের ঘোষণাকেও কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, শ্বেতপত্র প্রকাশ না করে ডেঙ্গি মোকাবিলায় মন দিক পুরসভা।

.