ভারতকে র‌্যাফাল কেনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর

মন্দাক্রান্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার উদ্দেশ্যে ভারতীয় বায়ুসেনার ফাইটার জেট কেনার দরপত্রকেই `পাখির চোখ` করেছিলেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক সামরিক লেনদেনের ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্‍ বরাত হাসিল করার জন্য কূটনৈতিক তত্‍পরতাও চালিয়েছিলেন জোরকদমে। শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি। ব্যর্থ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।

Updated By: Feb 1, 2012, 09:53 PM IST

মন্দাক্রান্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার উদ্দেশ্যে ভারতীয় বায়ুসেনার ফাইটার জেট কেনার দরপত্রকেই `পাখির চোখ` করেছিলেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক সামরিক লেনদেনের ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্‍ বরাত হাসিল করার জন্য কূটনৈতিক তত্‍পরতাও চালিয়েছিলেন জোরকদমে। শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি। ব্যর্থ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। মাল্টি রোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট বিক্রির লড়াইয়ে ফরাসি সংস্থা দাসো ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের তৈরি `র‌্যাফাল`-এর কাছে ইউরোফাইটার টাইফুনের এই `পরাজয়`কে অবশ্য মেনে নিতে রাজি নন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের কর্ণধার।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে খবর মিলেছে, প্রায় ১১,০০০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৫,০০,০০ কোটি টাকা)-এর ফাইটার জেটের `ডিল` পুনর্বিবেচনার জন্য ফের নয়াদিল্লির কাছে আবেদন জানাচ্ছেন তিনি। এদিন ব্রিটেন পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের বক্তব্যেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। রক্ষণশীল নেতার দাবি, ইউরোফাইটার টাইফুনের মত উত্‍কৃষ্ট যুদ্ধবিমানের উপযোগিতা ভারতকে বোঝানোর জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তিনি।

প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে সত্তরের দশকের মিগ-২১ যুদ্ধবিমানের পরিবর্তে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান ফাইটার জেট হিসেবে ১২৬টি পঞ্চম প্রজন্মের মাল্টি রোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে বরাত পাওয়ার দৌড়ে ছিল ৬টি যুদ্ধবিমান। দুই মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা লকহিড মার্টিনের এফ-১৬ আইএন ফাইটিং ফ্যালকন এবং বোয়িং-এর এফ/এ-১৮ ই/এফ সুপার ফ্যালকন-এর পাশাপাশি রাশিয়ার মিগ কর্পোরেশন নির্মীত মিগ-৩৫, সুইডেনের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাতা সংস্থা `সাব`-এর তৈরি গ্রিপেন, ফরাসি বিমান নির্মাতা সংস্থা ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের তৈরি র‌্যাফাল এবং ব্রিটেন, জার্মানি,স্পেন ও ইতালির যৌথ সংস্থা `ইউরোপিয়ান কনসোর্টিয়াম`-এর ইউরোফাইটার টাইফুন- এর তরফে ২০০৭ সালে দরপত্র জমা পড়ে।

প্রযুক্তিগত উত্‍কর্ষ, উড়ান-ক্ষমতা, আকাশযুদ্ধে দক্ষতা-র ৬৪৩টি মাপকাঠি পরীক্ষার পর শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত লড়াই দাঁড়ায় র‌্যাফাল এবং টাইফুনের মধ্যে। জার্মান-স্পেনীয় সংস্থা ইএডিএস, ইতালীয় কোম্পানি ফিনমেক্কানিকা এবং ব্রিটিশ বিমান নির্মাতা গোষ্ঠী বিএই সিস্টেমস-যৌথ উদ্যোগে নির্মিত ইউরোফাইটারের তুলনায় গতিবেগ কম হলেও সমর কুশলতা ও দামে টেক্কা দেয় র‌্যাফাল। কারগিল যুদ্ধে ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন-এর তৈরি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও ভারতীয় বায়ুসেনার বিশেষজ্ঞদের ফরাসি অভিমুখী সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ হয়ে ওঠে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুসারে আগামী ৩৬ মাসের মধ্যে ১৮টি র‌্যাফেল বিমান ভারতে রফতানি করবে ড্যাসল্ট গোষ্ঠী। বাকি বিমানগুলি ভারতীয় সংস্থা হ্যাল-এর সঙ্গে যৌথ কারিগরী উদ্যোগে বেঙ্গালুরুতে তৈরি হবে।

.