ব্যাকফুটে দিলীপ, জয় মুকুলের! শোভনের 'আবদারে' শেষমেশ রাজ্য কমিটিতে বৈশাখী
জি ২৪ ঘণ্টাকে ফোনে উচ্ছ্বসিত বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্য কমিটিতে ডাক পাওয়ায় কৃতজ্ঞ। এ দিনের বৈঠকে শোভন চট্টোপাধ্যায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, আগেই জানিয়েছিলেন
নিজস্ব প্রতিবেদন: নিজের নাম শুনতেই যেন বুকে ধড় পেলেন! শেষমেশ বিজেপির রাজ্য কমিটিতে জায়গা হলো বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ধনুক ভাঙা পণ ছিল, তাঁর সঙ্গে বিশেষ বান্ধবী বৈশাখীকে 'সম মর্যাদা' দিতে হবে দলে। অনেক জলঘোলার পর শোভনের আবদারে সিলমোহর দিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৈশাখীও এলেন রাজ্য স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্যের তালিকায়।
জি ২৪ ঘণ্টাকে ফোনে উচ্ছ্বসিত বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্য কমিটিতে ডাক পাওয়ায় কৃতজ্ঞ। এ দিনের বৈঠকে শোভন চট্টোপাধ্যায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, আগেই জানিয়েছিলেন। তবে, তাঁরা যে বিজেপির হয়ে ময়দানে নামতে প্রস্তুত সে ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন বৈশাখী ছাড়াও রাকেশ সিংও স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে জায়গা পেলেন।
যে দিন শোভন-বৈশাখী প্রথম পদ্মফুল হাতে তুলে নেন, দিলীপ ঘোষ তাঁদের এই জুটিকে সম্বোধন করেছিলেন 'ডাল-ভাত' বলে। বৃহস্পতিবার রাজ্য কমিটিতে শোভন-বৈশাখীর জায়গা হওয়ায় কিছুটা দিলীপ ব্যাকফুটে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে কার্যত মাথা নুইয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হলো রাজ্য নেতৃত্বকে, এমনও কথা উঠছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও বিজেপির তরফে এই সব জল্পনা উড়িয়ে জানিয়ে দেয়, দলই শেষ কথা। ব্যাকফুটে তো দূর বিজেপি আরও সামনে এগিয়ে যাবে। বৈশাখীর সংযোজনে গেরুয়া শিবিরের ব্যাখ্যা, দলে আরও মহিলা কর্মী চাই।
তবে, সে যাই হোক, শোভন-বৈশাখীর বিজেপির রাজ্য কমিটিতে ঠাঁই হওয়ায়, তাঁদের নিয়ে দড়ি টানাটানিতে কার্যত জয় হলো কৈলাসদের। আর এর পিছনে তৃণমূলের একদা চাণক্য মকুল রায়ের সব থেকে বেশি ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরপরই দল ছাড়তে চিঠি দিয়েছিলেন শোভন। ফের জল্পনা শুরু হয়ে যায় তাহলে কি ঘর ওয়াপসি হচ্ছেন শোভন-বৈশাখীর। তাঁদের ঘরে ফেরাতে তৃণমূলও সক্রিয় হয়ে ওঠে। কখনও পার্থ চট্টোপাধ্যায় তো কখনও ফিরহাদ হাকিম প্রাক্তন মেয়রে বাড়িতে ঢুঁ মারেন। দফায় দফায় আলোচনা হয়। তুঙ্গে ওঠে জল্পনাও।
অন্যদিকে, বিজেপিও হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি। শোভনের বাড়িতে ছুটে যান কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননরা। জানা যায়, বেশ কিছু শর্ত রাখেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য কমিটিতে শুধু শোভন নন, তাঁর বিশেষ বান্ধবী বৈশাখীকেও সম মর্যাদায় ওই কমিটিতে নিতে হবে। তৃণমূলের কটাক্ষ, এ সব বলে শোভন আসলে জল মাপছে। শেষমেশ, বৈশাখীর জায়গা 'পাকা' হতেই অনেকে বলছেন, সাধে বলে জল-শোভন!