Mamata in Darjeeling: 'পাহাড়ের মানুষের দিল্লির লাড্ডুর প্রয়োজন নেই', দার্জিলিংয়ে বিজেপিকে নিশানা মমতার
পাহাড়ের জন্য প্রকল্পের কথা বলে গিয়ে মমতা বলেন, চা বাগানে যাদের ঘর নেই তাদের মধ্য়ে ৩ লাখ ৮০ হাজার পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেব
নিজস্ব প্রতিবেদন: দার্জিলিংয়ে সরকারি অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রকে একহাত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাহাড়ের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বিরোধীদের ভোটের রাজনীতির কথা টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দেশে বহু রাজনৈতিক দল রয়েছে। ভোটের সময়ে এক কথা বলে। ভোট ফুরলেই অন্য কথা শোনা যায়। ভোটের আগে বলেছিলাম লক্ষ্মীর ভান্ডার করব, করে দিয়েছি। স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের কথা বলেছিলাম, করেছি। দুয়ারে রেশনের কথা বলেছিলাম, করেছি। আর দিল্লির সরকারকে দেখুন, বছরে ১০ বার পেট্রোলের দাম বাড়ায়। গ্যাস, কেরাসিনের দাম বাড়ায়, চা বাগান বন্ধ করে দেয়। নিজেরই আগুন জ্বালায়, আবার বদনামও করে বাংলাকে। ওরা বাংলাকে ভালোবাসে না। মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। শুধু আগুন লাগানোই ওদের কাজ। ভায়োলেন্স, ভায়োলেন্স বলে রাজ্যের দুর্নাম করে।
এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ইউপিতে ভোটে জিতে ৫ দিনে ৫ বার পেট্রোলের দাম বাড়িয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়েছে। মানুষ কী খাবে, বিজেপি খাবে? নাকি দিল্লির লাড্ডু খাবে? অনেক দেখলান। ভোট এলেই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দল এসে এখানে উল্টোপাল্টা বলে ভোটে নিয়ে চলে যায়। তারপর বছরের পর বছর তাদের কোনও পাত্তা পাওয়া যায় না। তাই আপনাদের দিল্লির লাড্ডুর প্রয়োজন নেই। আপনাদের অনেক আছে। আপনাদের অনেক ট্যালেন্ট রয়েছে। দার্জিলিং এখন খুশি। প্রচুর পর্যটক আসছেন। যত হোটেল রয়েছে সব ভর্তি। যখন দার্জিলিং হাসে তখন এমন পরিস্থিতি হয়। দার্জিলিংকে গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন করব। এখানে জিটিএর নির্বাচন হবে। আমি চাই নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে উন্নয়নের কাজ করুন।
পাহাড়ের জন্য প্রকল্পের কথা বলে গিয়ে মমতা বলেন, পাহাড়ে চা বাগানের জন্য চা সুন্দরী প্রকল্প তৈরি করেছি। ওইসব চা বাগানে যাদের ঘর নেই তাদের মধ্য়ে ৩ লাখ ৮০ হাজার পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেব। সেই কাজ শুরু করে দিয়েছি। যখন ক্ষমতায় ছিলাম না তখন চা শ্রমিকরা পেতেন দৈনিক ৬৭ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২০২ টাকা। আগে চা বাগান বন্ধ হলে ৬ মাসের পর সাহায্য পেতেন শ্রমিকরা। এখন ২ মাসের মধ্য়ে দেড় হাজার টাকা পান শ্রমিকরা। বিনা পয়সার বিদ্যুত্, জল পান তাঁরা, হেলথ কার্ড পান তাঁরা। মাসে ৩৫ কেজি রেশন দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড যদি কেউ না পেয়ে থাকেন তাহলে দুয়ারে সরকারে আবেদন করুন। আড়াই কোটি মানুষ এখন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধে পাচ্ছেন। এখন চিকিত্সার জন্য টাকা লাগে না, পড়ার জন্য খরচ হয় না, ১২ ক্লাসে মোবাইল পাওয়া যায়, ক্লাস নাইনে সাইকেল পাওয়া যায়। দার্জিলিংয়ে গত ২০ বছরে কোনও জমির পাট্টা দেওয়া হয়নি। আইনি সমস্যা ছিল। আমরা তা মিটিয়ে দিয়েছি। যারা ওই পাট্টা পাওয়ার যোগ্য তারা তা পেয়ে যাবেন। দার্জিলিংয়ে হিল ইউনিভার্সিটি তৈরি হবে, কার্শিয়াংয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজের একটি শাখা হচ্ছে।
কেন্দ্রকে দুষে মমতা আরও বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ হচ্ছে। দেশের বহু পড়ুয়ারা ফিরে এসেছেন। বাংলাতেও ৪০০ জন পড়ুয়া ফিরেছে। দিল্লিকে বলেছিলাম, পারমিশন দাও আমরা ওদের পড়াব। কাল পার্লামেন্টে কেন্দ্র বলেছে পারমিশন দেওয়া হবে না। পড়ুয়াদের প্রতি যদি কোনও সমবেদনা থাকে তাহলে ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের এদেশে পড়ার অনুমতি দেওয়া হোক। যুদ্ধ লাগার পর মনে ছিল না এদেক কী হবে? আমি বলেছি কোনও টাকা নেব না। পারমিশনটা শুধু দিন। বুঝতে হবে এরা মিথ্যে কথা বলে। সকালে এরা মিডিয়াকে বলে মমতা বিরুদ্ধে এসব বলতে। শুধু মানুষকে উত্তক্ত কর যাতে তেলের দামে মানুষের নজর না যায়। বহুদিন ধরে বলে আসছি দার্জিলিংয়ে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত করা হোক। করা হচ্ছে না। আমি চাই আপনারা ভালো থাকুন। এখানে শিল্প হোক। চেষ্টা করুন ১০ বছর কোনও ঝগড়া করব না। দেখুন দার্জিলিং কোথায় যায়।
আরও পড়ুন-একা রেখে চলে যায় 'সঙ্গী'রা! ভাদু খুনে ‘অন্তর্ঘাত’? উঠছে জোরালো প্রশ্ন