বিশ্বভারতী কাণ্ডে জামিনে মুক্ত অভিযুক্ত ওয়ার্ডেন, রাজ্য সরকারকে চিঠি এনসিপিসিআরের
বিশ্বভারতীর পাঠভবনে ছাত্রী হেনস্থার ঘটনায় অভিযুক্ত ওয়ার্ডেনকে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সোমবার জামিনে মুক্তি দিয়ে দিল আদালত। জামিন হয়েছে ছাত্রীর বাবা-মায়েরও। যদিও, কার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ছাত্রীর অভিভাবকদের গ্রেফতার করেছিল পুলিস তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে।
বিশ্বভারতীর পাঠভবনে ছাত্রী হেনস্থার ঘটনায় অভিযুক্ত ওয়ার্ডেনকে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সোমবার জামিনে মুক্তি দিয়ে দিল আদালত। জামিন হয়েছে ছাত্রীর বাবা-মায়েরও। যদিও, কার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ছাত্রীর অভিভাবকদের গ্রেফতার করেছিল পুলিস তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে উপাচার্য জানিয়েছেন, তাঁদের তরফে থানায় কোনও এফআইআর দায়েরই করা হয়নি। ফলে পুলিসের এই অতিসক্রিয়তার কারণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
বিশ্বভারতীর করবী ছাত্রী নিবাসের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী রাতে বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলেছিল। ওয়ার্ডেন উমা পোদ্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ওই প্রস্রাব খেতে বাধ্য করেন ছাত্রীকে। ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে ছাত্রীটি। পরিবারের তরফে দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার গ্রেফতার হন অভিযুক্ত ওয়ার্ডেন। জামিনে মুক্তিও পেয়ে যান কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। পুলিসের বক্তব্য, ছাত্রীর অভিভাবকদের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ওই ছাত্রীকে জোর করে রাতে ছাত্রীনিবাস থেকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছিল। ছাত্রীর বাবা-মা সহ পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিস। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের তরফে কোনও এফআইআর দায়ের করাই হয়নি।
ওই ছাত্রীর চিকিত্সার প্রয়োজন হলে তার খরচ অভিযুক্ত ওয়ার্ডেনের মাইনে থেকে কেটে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বোলপুর আদালত। এই খরচ দিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে বলে সোমবার জানিয়েছে আদালত। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে অভিযুক্ত ওয়ার্ডানকে। যদিও ছাত্রী হেনস্থাকাণ্ডে ওয়ার্ডেনকে আড়াল করতেই সচেষ্ট কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে সোমবার আইনজীবীদের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলার শুনানি হবে আগামী শুক্রবার। এবিষয়ে ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটসের পক্ষ থেকেও রাজ্য সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যাবতীয় তথ্য জানিয়ে দশ দিনের মধ্যে চিঠির জবাব পাঠাতে বলা হয়েছে। ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস। ঘটনা খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকারকে কড়া পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে এনসিপিসিআরের পক্ষ থেকে। চিঠিতে দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ চেয়ে পাঠিয়েছে এনসিপিসিআর। বিশ্বভারতীর হস্টেলে কীভাবে রাখা হয় ছাত্রীদের, কী যোগ্যতার ভিত্তিতে ওয়ার্ডেন নিয়োগ করা হয়, এই বিষয়গুলি স্পষ্ট করে জানাতে বলা হয়েছে। এই ঘটনার জেরে যে মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে ওই ছাত্রীকে। সেজন্য ছাত্রীটির বিনামূল্যে কাউন্সেলিং করাতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে।