লকডাউনে কতক্ষণ পর্যন্ত শিশুর টিভি দেখা, মোবাইল ঘাঁটা নিরাপদ! জানুন কী বলছে WHO

ঠিক কতক্ষণ স্মার্টফোন, টিভি বা কম্পিউটারের সঙ্গে সময় কাটানো শিশুর জন্য নিরাপদ তা কি জানেন? আসুন জেনে নেওয়া যাক...

Edited By: সুদীপ দে | Updated By: Apr 15, 2020, 12:36 PM IST
লকডাউনে কতক্ষণ পর্যন্ত শিশুর টিভি দেখা, মোবাইল ঘাঁটা নিরাপদ! জানুন কী বলছে WHO

নিজস্ব প্রতিবেদন: বর্তমানে লকডাউনের জেরে সকলেই ঘরবন্দি। কিন্তু ঘরবন্দি অবস্থায়ও কাজের কী শেষ আছে! লকডাউনের জেরে কাজের লোকের আসা বন্ধ হয়েছে। ফলে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এ অফিসের কাজের চাপ সামলে ঘরের এমন অনেক কাজ করতে হচ্ছে যেগুলি সম্পর্কে লকডাউনের আগে পর্যন্ত তেমন কোনও ধারণা ছিল না। ফলে দুতরফা কাজ সামলে বেশির ভাগ বাবা-মায়েরই তাঁদের সন্তানকে দেওয়ার মতো সময় অনেকটাই কমে গিয়েছে।

একান্নবর্তী পরিবারের সংখ্যাও এখন ‘হাতে গোনা’। ফলে শিশুকে সময় দেওয়ার মতো কেউ নেই। লকডাউনে সকলকেই বাড়ির মধ্যে কাটাতে হবে। তাই শিশুর খেলাধুলোরও সুযোগ নেই বললেই চলে। ফলে বদ্ধ ঘরেই স্মার্টফোন, টিভি, কম্পিউটারের সঙ্গে কাটছে বেশির ভাগ শিশুর শৈশব। তবে শুধু লকডাউনেই নয়, বছরের বেশির ভাগ সময়েই বাবা-মায়ের ব্যস্ততায় স্মার্টফোন, টিভি আর কম্পিউটারের সঙ্গে সময় কাটাতেই বাচ্চারা বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়ে যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক!

স্মার্টফোন, টিভি বা কম্পিউটারের প্রতি সন্তানের অতিরিক্ত আকর্ষণ যে তার শারীরিক বাড়-বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় তা এখন বেশির ভাগ বাবা-মায়েই বোঝেন। কিন্তু ঠিক কতক্ষণ স্মার্টফোন, টিভি বা কম্পিউটারের সঙ্গে সময় কাটানো শিশুর জন্য নিরাপদ তা কি জানেন? এ প্রশ্নের উত্তর মিলেছে সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর (WHO) একটি নির্দেশিকায়। ঠিক কী বলা হয়েছে এই নির্দেশিকায়? আসুন জেনে নেওয়া যাক...

child care

ওই নির্দেশিকায় হু জানিয়েছে, যত বেশি সময় শিশু টিভি, স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের সঙ্গে কাটাবে, ততই তার মানসিক, শারীরিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ওই নির্দেশিকাতে স্পষ্টই বলা হয়েছে, শিশুর মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য টিভির পর্দা নয়, খেলার মাঠেই উপযুক্ত। ২ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের যত বেশি করে শারীরিক ক্রিয়াকলাপে, দোড়ঝাপ, খেলাধুলোয় নিযুক্ত করা যায়, ততই ভাল। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ওদের বাড়ির বাইরে বের করাটাই বিপজ্জনক! তাহলে উপায়?

এর জন্য কী কী করবেন?

১) ঘরবন্দি অবস্থায় দৌড়ানোর অভ্যাস করানো সম্ভব নয়। তাই খেলার ছলে স্কিপিং বা লাফ দড়ির সাহায্য সন্তানকে শরীরচর্চা করার।

২) সন্তানের সঙ্গে খেলায় সঙ্গ দিন আপনিও। ওদের সঙ্গে খেলতে খেলতে বাড়ির বড়দেরও খানিকটা শরীরচর্চা হয়ে যাবে।

৩) খেলার ছলে সন্তানকে যোগাভ্যাস করান। ঘরবন্দি অবস্থায় যোগার চেয়ে ভাল শরীরচর্চা আর কিছুই হতে পারে না।

৪) পড়াশুনার বাইরে অবসর সময় কাটানোর জন্য সন্তানের হাতে মোবাইল ফোনের পরিবর্তে তুলে দিন গল্পের বই, ধাঁধাঁর সামগ্রী।

আরও পড়ুন: লকডাউনে ঘরেই শরীরচর্চা? পদ্ধতির ভুলে ডেকে আনতে পারে মারাত্মক বিপদ!

হু-এর এই নির্দেশিকা অনুযায়ী, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিভি, মোবাইল বা কম্পিউটারে সঙ্গে যতটা কম সময় কাটাবে, ততই ভাল। ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা দিনে বড়জোড় ১ ঘণ্টা টিভি বা কম্পিউটারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারে। এর বেশি হলেই বাড়বে বিপদ! সুতরাং, সন্তানের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই নির্দেশিকা মাথায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

খেয়াল রাখবেন, ওদের যেন কখনওই মনে না হয় যে, ঘরে আটকে রেখে ওদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। বরং এই সময়টা ঘরের মধ্যে থাকার উপকারিতা সম্পর্কে ওদের বোঝানোর চেষ্টা করুন।

.