'অর্জুনদার বারণ শুনিনি', কাঁচড়াপাড়ার 'সার্কাস' নিয়ে বাবার মতো ভুলস্বীকার শুভ্রাংশুরও
"যাঁরা গিয়েছেন, সেই ৫ জন যোগাযোগ রাখছেন। আমরা সার্কাস দেখছি। আমি কল লিস্ট দেখাতে পারি।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : বাবার পথেই 'ভুল স্বীকার' করল ছেলে। মঙ্গলবার স্বগতোক্তি করছিলেন মুকুল রায়। বলেছিলেন, 'অর্জুনের কথা না শুনে ভুল করেছি।' আজ সেই একই সুর ছেলে শুভ্রাংশু রায়ের গলায়। সাফ বললেন, "অর্জুনদা বারণ করেছিল। আমি শুনিনি।"
কাঁচড়াপাড়া পুরসভায় মোট আসন ২৪। তার মধ্যে একজন সিপিএম ও একজন নির্দল কাউন্সিলর। বাকি ২২ জন তৃণমূলের। লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পর সেই ২২ জনের মধ্যে ১৭ জন-ই শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গে দিল্লি যান। সেই দলে ছিলেন চেয়ারম্যান সুদামা রায়ও। এরপরই কাঁচড়াপাড়া পুরবোর্ড ঘিরে আশঙ্কা দানা বাঁধে।
এখন হালিশহরের পর কাঁচড়াপাড়া পুরসভাতেও তৃণমূলের ঘরে ফেরার ধুম! দল ছেড়ে বিজেপিতে চলে যাওয়া ১২ জন কাউন্সিলর ফের তৃণমূলে ফিরছেন বলে দাবি করেছেন যুব সভাপতি সুজিত বসু। কাঁচড়াপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান সুদামা রায়ও তৃণমূলে ফিরছেন বলে খবর হাওয়ায় ভাসছে। যদিও জি ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধির কাছে কাঁচড়াপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান সুদামা রায় দাবি করেছেন, তিনি বিজেপিতে ছিলেন, বিজেপিতেই থাকবেন।
এই টানাপোড়েনের মধ্যেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য স্থানীয় বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের। সবটাই 'সার্কাসের খেলা' চলছে বলে কটাক্ষ করেছেন মুকুল পুত্র। শুভ্রাংশু রায় দাবি করেছেন, "যাঁরা গিয়েছেন, সেই ৫ জন যোগাযোগ রাখছেন। আমরা সার্কাস দেখছি। আমি কল লিস্ট দেখাতে পারি।" এরপরই তাঁর সংযোজন, "অর্জুনদা বারণ করেছিল। আমি শুনিনি। যাকগে। পুরসভা ভোট আর কয়েক মাস পরে। মানুষ সব দেখছে। মানুষ যাদের বিরুদ্ধে ভোট করেছে আজ তাঁরা পাল্টি খাচ্ছেন। সব্যসাচীদা বলেছে না গেম, আমরা এখন খেলা উপভোগ করছি।"
আরও পড়ুন, এক ভোটের ব্যবধানে হরিণঘাটা পুরসভা দখলে রাখল তৃণমূল
কাঁচড়াপাড়া পুরসভায় আজ তাঁরা কোনও অনাস্থা আনছেন না বলেও জানিয়েছেন শুভ্রাংশু রায়। তিনি বলেন, "আজ অনাস্থা না। ওরা দিল্লি থেকে আসুক। তারপর সিদ্ধান্ত।" উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিজেপি থেকে ফের তৃণমূল শিবিরে ফেরেন হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান অংশুমান রায়। তাঁর সঙ্গেই আরও ৮ জন কাউন্সিলর দলে ফিরছেন বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
মঙ্গলবারের এই ঘটনায় হালিশহর পুরসভায় কার্যত নাক-কান কাটা যায় বিজেপির তথা মুকুল রায়ের। হালিশহরের পুরপ্রধানকে বিজেপিতে যোগদান করানো 'ভুল ছিল' বলে গতকালই স্বীকার করে নেন তিনি। বলেন, 'অর্জুন আমাকে বলেছিল ও বিশ্বস্ত নয়। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাকে এমনভাবে এসে বলেছিল। বয়স হয়েছে, তাই এখন কেউ কিছু বললে বিশ্বাস করে ফেলি।'