srinivasan_ipl_spot_fixing

শ্রীনির ঘরে কে? আমি তো কলা খাইনি...

শ্রীনির ঘরে কে? আমি তো কলা খাইনি...গতবারের আইপিএল কলঙ্কের কমলা টুপির অগ্রাধিকার পেয়েছিলেন শ্রীসন্থ। অনেক টানাপড়েন, আশঙ্কা, উত্কন্ঠার দিন কাটিয়ে শ্রীসন্থ সহ আরও দুই অনামী ক্রিকেটার অবশেষে শ্রীঘরে ঠাঁই পেয়েছিলেন। কিন্তু কান টানলে যে মাথা আসে গল্পটা আজ অনেকের জানা হয়ে গেছে। বিন্দু দারা সিং, চেন্নাই সুপার কিংসের অধিপতি গুরুনাথ মিয়াপ্পন পর্দার পিছনে `কলঙ্কিত আইপিএলে`র অনেক চিত্রনাট্য লিখেছেন। এখন প্রশ্ন এই চিত্রনাট্যের অন্যতম নায়ক কে?

তবে এই চিত্রনাট্যে যে মানুষটিকে নিয়ে জলঘোলার জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে তিনি হলেন মিয়াপ্পনের শ্বশুর, `প্রাক্তন` বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট, ইন্ডিয়া সিমেন্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর, তামিলনাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান, তামিলনাড়ু গল্ফ অ্যাসোসিয়েশন ও অল ইন্ডিয়া দাবা`র প্রধান এবং ইঞ্জিনিয়ার এবং ব্রাহ্মণ পরিবারের তামিল সন্তান শ্রী শ্রী নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। ক্ষমতালোভী এই মানুষটিকে যথাযথ শিরোপা দেওয়া গেল কিনা সন্দেহ আছে কারন এরপরেও যদি ভুতের রাজা বর দেন তাহলে তিনি আইসিসির চেয়ার....থাক গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল দিয়ে লাভ নেই।

শ্রীনিবাসন ভেবেছিলেন বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট পদটি ইন্ডিয়া সিমেন্টের তৈরি। তাকে টলানো কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তবে প্রমাণ করার জন্য তিনি যথাযথ চেষ্টাও করেছিলেন। গতবছর জুন মাসে স্পট ফিক্সিংয়ের কালো মেঘ ঢেকে দিয়েছিল ক্রিকেটবিশ্বকে। মিডিয়া থেকে ক্রিকেটপ্রেমীরা যতই গর্জাক শ্রীনি একটুও বর্ষায়নি। কালবৈশাখী ঝড়ের আভাস বুঝে শ্রীনির অনুগত বিসিসিআই সচিব সঞ্জয় জাগদলে ও কোষাধক্ষ্য অজয় শিরকে রাতারাতি ইস্তফা দেন। চাপ দেওয়া হয় শ্রীনিকে। একের পর এক তথ্য বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মিডিয়া সজোরে ধাক্কা দেয়। কিন্তু শ্রীনির ঘরে জোরসে ধাক্কা ধিরেসে লাগে। অবশেষে একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মেনে সরে দাঁড়ান বিসিসিআইয়ের পদ থেকে। সত্য উত্ঘাটনের স্বার্থে সরে দাঁড়াতে হয় শ্রীনিকে। শ্রীনি কি নির্দোষ সময় বলবে তবে একটা প্রশ্ন ভাবিয়ে তুলছে যাঁরা এক সময় শ্রীনির ঘরে ওঠাবসা করতেন তারা কোথায়। বিপদ বুঝে অনেকেই ইস্তফা দিয়েছেন। দুরত্ব বজায় রাখছে সেইসময়কার সহযাত্রীরা।

প্রশ্ন এক, ঘমিষ্টমহলের খবর বিসিসিআই সচিব সঞ্জয় জাগদলে ছিলেন শ্রীনির সবচেয়ে অনুগত। অনেকেই ঠাট্টা করে বলতেন “ওঁর উচ্চতা যতটা, সাহস ঠিক ততটাই কম।” শ্রীনি এ্যান্ড কোম্পানি যদি স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকে, তিনি একজন সর্বময় কর্তা ও শ্রীনি ঘনিষ্ঠ হিসবে কোনও কথাই জানতেনা। ইস্তফা দেবার সময় জানিয়েছিলেন, `ভারতীয় ক্রিকেটে যা চলছে, তাতে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছি।। তাই সরে দাঁড়ালাম।` যখন পাশের বাড়ি আগুন লেগে ভস্মীভূত, এর আগে একটুও আঁচ পেলেন না সঞ্জয় জাগদলে ও অজয় তিরকের মতো সর্বময় কর্তারা।

প্রশ্ন দুই, আইসিসি এর আগেই থেকে সব জানত, তা হলে কিছু করেনি কেন এত দিন? গতবছর বোর্ডের শেষ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আইসিসির দুর্ণীতি দমন শাখার প্রধান উপস্থিত ছিলেন কিন্তু একটাও শব্দ খরচ করেননি। শ্রীনি কাণ্ডের পটভূমিতে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

ললিত মোদি দিয়ে হাতেখড়ি `কলঙ্কিত আইপিএলের`। তারপর অনেক জল গড়িয়েছে। বিন্দু বিন্দু করে সিন্ধুতে পরিনত হয়েছে। উত্কণ্ঠা বাড়ছে আর কতদূর যাবে। ২২ এপ্রিল পরবর্তী সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে আরও দুই একজন অভিযুক্ত বেরিয়ে গেলে তাহলেই বলা যেতে পারে ফিক্সিংয়ের পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো। এবার আপনি বলুন।


First Published: Friday, April 18, 2014, 17:38


comments powered by Disqus